Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

টাইম ম্যানেজমেন্ট উইথ ইসলাম pdf

টাইম ম্যানেজমেন্ট উইথ ইসলাম pdf Info

টাইম ম্যানেজমেন্ট উইথ ইসলাম pdf Description

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; আহমেদ ফারুক লিখিত বই টাইম ম্যানেজমেন্ট উইথ ইসলাম এর pdf ফাইল ডাউনলোড করতে নিচে দেওয়া DOWNLOAD বাটনে ক্লিক করুন।

হায়! আমাদের যদি আরেকটি সুযোগ হতো, তবে আমরা মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। (সূরা আশ-শুআরা, আয়াত-১০২)

জীবন অতি ক্ষুদ্র কিছু সময়ের সমষ্টি মাত্র। কায়দা কানুন না জানলে বহু কাজ করা হবে কিন্তু ফলাফল আশানুরূপ হবে না। মহান আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই অবশ্যই জিজ্ঞেস করবেন সময়ের ব্যবহার সম্পর্কে। দুনিয়ার জীবনে অর্থ, যশ, খ্যাতি হারালে আবার ফিরে পাওয়া যায়। কিন্তু গরুর বাট থেকে দুধ বের হলে যেমন প্রবেশ করানো যায় না তেমনি হারানো সময় আর ফিরে পাওয়া যায় না।

মানুষের জীবনে টাইম ম্যানেজমেন্ট এর গুরুত্ব অনেক। এটি কাজের চাপ কমায়, অলসতা দূর করে এবং জীবনে সাফল্য এনে দেয়। আর একজন বিশ্বাসী মানুষের জীবনে টাইম ম্যানেজমেন্টের উদ্দেশ্য এতটুকুর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং সব কাজেই তার পরম লক্ষ্য থাকে ইহকালীন ও পরকালীন সাফল্য অর্জন, যা তাকে এনে দেবে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং জান্নাতুল ফেরদাউসের সুউচ্চ মর্যাদা।

সুরা আসর, আদ-দুহা, আল লাইল, আশ শামস, আল ফজরে আল্লাহ তায়ালা সময়ের কসম করেছেন। এতে প্রতীয়মান হয়, আল্লাহ তায়ালার কাছে সময় মহামূল্যবান।

অন্য সকল ব্যবসায়িক কাজের মতো টাইম ম্যানেজমেন্ট ইসলামিক পদ্ধতিতে শেখা যায়। তাই এটা শেখা জটিল কিছু নয়। আরো একটা ভালো ব্যাপার হলো টাইম ম্যানেজমেন্টের অনুশীলন এমন একটি অনুশীলন যা আপনাকে কিছু না কিছু সুফল অবশ্যই দেবে। অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার চেয়ে টাইম ম্যানেজমেন্টের খুঁটিনাটি নিয়ে অনুশীলন করা ভালো।

সময় ব্যবস্থাপনার সুন্দর নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। বিশ্বাসী মানুষের সময় নিয়ন্ত্রণের ভিত্তি মূল হলো নামাজ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা সফল মুমিনের আলোচনা করেছেন, সেই আলোচনার শুরুও করেছেন নামাজের কথা দিয়ে এবং শেষও করেছেন নামাজের আলোচনার মাধ্যমে।

‘মুমিনরা সফলকাম হয়ে গেছে, যারা নামাজে বিনয়-নম্রতা অবলম্বন করে।… এবং যারা নিজেদের নামাজের ব্যাপারে যত্নবান।’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ১,২ ও ৯)

আয়াতে নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়ার অর্থ হলো ঠিক সময়ে নামাজ আদায় করা। প্রকৃত মুমিন যেখানেই যে অবস্থায় থাকুক দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় সঠিক সময়ে আদায় করবেই।

প্রিয়নবী (সা.) মৃত্যুশয্যায়ও ইশারায় নামাজ আদায় করেছেন। আর পুরো দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো আদায় করতে হলে তাকে সদা সময়-সচেতন হতে হবে। এভাবেই মনের অজান্তে নামাজ মুমিনের টাইম ম্যানেজমেন্টের ভিত্তিমূল হয়ে ওঠে।

টাইম ম্যানেজমেন্ট অনেকটা সাইকেলে চড়ার মতো, কি-বোর্ডে লেখার মতো অথবা কোনো একটা খেলার মতো। এটা বিভিন্ন কলাকৌশল, প্রয়োগ কৌশল ও পদ্ধতি দ্বারা গঠিত। এটা এমন এক কলাকৌশল যা আপনি দৃঢ় সংকল্প ও পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে শিখতে পারেন, চর্চা করতে পারেন এবং টাইম ম্যানেজমেন্টের একজন গুরু হয়ে উঠতে পারেন।

তবে প্রথমে আপনাকে যে কাজ করতে হবে তা হচ্ছে, আপনার সময় আসলে যায় কোথায়? তা আগে খুঁজে বের করা। বর্তমান কাজের ধারা অনুযায়ী, আপনার সময় কোথায় এবং কীভাবে ব্যয় হয় তা খুঁজে বের করা দরকার। বেশিরভাগ লোকজন এ ব্যাপারটাই এড়িয়ে যায়। যদি তারা কখনো তা খুঁজে বের করতে না চায়, তাহলে অবশ্যই টাইম ম্যানেজমেন্টের অগ্রগতি করা কঠিন।

লেখক পিটার ড্রাকার এর লেখা বিখ্যাত বই ‘The Effective Executive’. এই বইতে টাইম ম্যানেজমেন্ট এর জন্য তিনটি ধাপ অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। বইটির ‘নিজের সময়কে জানুন অধ্যায়ে তিনি এই বিষয়টি আলোচনা করেছেন। ধাপ তিনটি হলো-

১. আপনার সময়ের বিশ্লেষণ করুন।

২. নিরর্থক চাহিদাগুলো ছাঁটাই করুন।

৩. হাতে সময় নিয়ে আপনার কাজগুলো সম্পন্ন করার লক্ষ্য স্থির করুন।

একজন আদর্শবান মুসলিমের প্রাত্যহিক জীবন রীতির আলোকে উপরোক্ত ধাপ তিনটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

১. সমরের বিশ্লেষণ করুন

আপনি আপনার বর্তমান অবস্থান খুঁজে বের করুন। তাই আগামী এক সপ্তাহ আপনার সময় কীভাবে কাটছে তা লিপিবদ্ধ করুন। আপনি এর জন্য খাতা-কলম, ডায়েরি, কম্পিউটার বা মোবাইলের প্যাড ব্যবহার করতে পারেন। আপনি এক সপ্তাহ পর দেখতে পাবেন যে আপনি কতটা সময় অপচয় করেন।

এটা খুঁজে বের করার জন্য প্রথম কাজটি হচ্ছে পরিমাপ করা। অনুমান করবেন না। অনুমানে কাজ হয় না। পরিমাপ করার সহজ উপায় হচ্ছে পাই চার্টের ব্যবহার। এতে করে সহজেই শতাংশের হিসাবে সময় ও কাজের পরিধি দেখা যায়। আপনার কাজের মূল খাত গুলো লিখুন। তারপর পাই চার্ট এর বিভিন্ন অংশে খাতগুলো উল্লেখ করুন। এসব খাতে থাকতে পারে-

১. লেখালেখি

২ ফোন করা

৩ মিটিং

৪ পরিকল্পনা ইত্যাদি।

আরো ব্যক্তিগত বা ভিন্ন কিছুও থাকতে পারে। আপনি নিজের মতো করে বসিয়ে নিন।

দ্বিতীয় উপায় হচ্ছে একটি টাইম লগ ব্যবহার করা। টাইম লগ হচ্ছে সময় ও কাজের উদ্দেশ্য লিখে রাখার একটি খাতা বা ডায়েরি। টাইম লগ ব্যবহার করে আপনি বেশ পরিচ্ছন্ন ও স্পষ্টভাবে আপনার সময় আসলে কোথায় যায় তা দেখতে পাবেন।

দিনের সবকিছু নথিভুক্ত করবেন, কমপক্ষে এক সপ্তাহ কী করেছেন তা উল্লেখ করবেন। যদি সম্ভব হয় এক মাসের সময় হিসাব নথিভুক্ত করুন। এটা করতে খুব বেশি সময় লাগে না, মাত্র দু-এক মিনিট। কিন্তু আপনাকে শৃঙ্খলার সাথে এটা পালন করতে হবে।

খুব অল্প লোকই আছে যারা নিজেদের সময়ের ভাগ-বণ্টন দেখে অবাক হয় না। অবশ্য যারা এ ডায়েরি ঠিকমতো লিখে রাখতে পারে, তারা হয়তো চিন্তা করে তারা গুরুত্বপূর্ণ কিছুতেই সময় দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় তারা ভিন্ন কিছুতে সময় ব্যয় করছে, যা তাদের করার কথা নয়। তাই সামনে যা আসে তাই করবেন না। আগে টাইম লগ লিখুন। ডায়েরিতে লেখা বজায় রাখুন। তারপরই আপনি বুঝতে পারবেন, কোন খাতে কত সময় যাচ্ছে এবং কত সময় দেয়া উচিত। এটা অবশ্যই আপনার জন্য মেনে নেয়া কষ্টকর হবে। তবে নিজের সাথে সত্যবাদীর মতো আচরণ করাটাই হলো প্রতিকারের প্রথম পদক্ষেপ।

‘সৎ লোক সাতবার বিপদে পড়লে আবার উঠে, কিন্তু অসৎ লোক বিপদে পড়লে একবারে অধঃপতন ঘটে।’

২. নিরর্থক চাহিদা গুলো বাদ দিন

হযরত সুলাইমান (আ.)

আপনার চলমান সময়ের মাত্র এক সপ্তাহ বিশ্লেষণের পর আপনার মধ্যে দুঃখবোধ হতে পারে। এই দুঃখবোধ ঝেড়ে ফেলুন এবং ভাবুন- আমরা এমন অনেক কিছুই করি যা একেবারেই ঝেড়ে ফেলা যায়।

আপনার এমন মনে হতেই পারে যে সকালবেলা চা খাওয়ার অজুহাতে চায়ের দোকানে অযথা এক ঘণ্টা আড্ডা দিয়েছি। যার কোনো ভালো দিক নেই। বরং ওই চায়ের দোকানে যেসব বেহুদা কথা বলেছি তার অধিকাংশই ছিল গীবত, অর্থাৎ অন্যের সমালোচনা। অথচ গিবত সম্পর্কে কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আমরা জানি ‘গীবত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ পরনিন্দা করা, কুৎসা রটানো, পিছনে সমালোচনা করা, পরচর্চা করা, দোষারোপ করা, কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষ অন্যের সামনে তুলে ধরা। ইসলামি শরিয়তে গীবত হারাম ও কবিরা গুনাহ। হাদিসের বর্ণনা এসেছে-

‘যারা অগ্র-পশ্চাতে অন্যের দোষ বলে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে ধ্বংসের দুঃসংবাদ।’ (মুসলিম)

Rate the Post

Categories

Writers

Popular Books

Scroll to Top