Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

আহকামুন নিসা pdf

আহকামুন নিসা pdf Description

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; মাওলানা মুহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিন লিখিত বই আহকামুন নিসা এর pdf ফাইল ডাউনলোড করতে নিচে দেওয়া DOWNLOAD বাটনে ক্লিক করুন।

নেককার পরহেযগার লোকদের জীবনী পাঠ করলে তাদের মত নেককার পরহেযগার হওয়ার আগ্রহ পয়দা হয়, তাদের মত আমল ও ইবাদত-বন্দেগী এবং সাধনা করার জবা সৃষ্টি হয়। ওলী আউলিয়া ও বুযুর্গানে দ্বীনের কাহিনী শুনলে গাফেল অন্তর জেগে উঠে। ওলী আউলিয়া ও বুযুর্গানে দ্বীনের হালাত সামনে না থাকলে মানুষ হয়তোবা আমল ও সাধনায় অগ্রসর হতে পারে না কিংবা অল্প আমল ও কিঞ্চিৎ সাধনা করেই মনে করে যে, অনেক করছি। কিন্তু বুযুর্গানে দ্বীনের হালাত দেখলে তখন মানুষ বুঝতে পারে তাদের আমলে কত ত্রুটি ও স্বল্পতা রয়েছে। আমলের আগ্রহ ও জযবা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে এবং দ্বীনের উপর চলার নমুনা বোঝার জন্য নিম্নে নেককার বুযুর্গ বিবিদের কিছু কাহিনী পেশ করা হল।

হযরত আদম (আ.)-এর স্ত্রী বিবি হাওয়া: হযরত হাওয়া (আ.) পৃথিবীর প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী হযরত আদম (আ.)-এর স্ত্রী। হযরত আদম (আ.) আদি পিতা আর হযরত হাওয়া (আ.) পৃথিবীর সকল মানুষের মা। আল্লাহ তাআলা তাঁর বিশেষ শক্তির দ্বারা হযরত হাওয়া (আ.) কে হযরত আদম (আ.)-এর বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর হযরত আদম (আ.)-এর সাথে বিবাহ দিয়েছেন। তাঁদের উভয়কে জান্নাতে থাকার স্থান দিয়েছেন। আর জান্নাতের বিশেষ একটি গাছের ফল খেতে নিষেধ করেছেন।

শয়তান তাঁদেরকে এই বলে ধোঁকা দিয়েছে যে, তোমরা এই গাছের ফল আহার করলে জান্নাতে চিরস্থায়ী হতে পারবে। তাঁরা শয়তানের ধোঁকায় পড়ে সেই গাছের ফল খেয়েছেন। তখন আল্লাহ তাআলা আদেশ করেছেন : তোমরা জান্নাত ছেড়ে পৃথিবীতে যাও। হযরত আদম (আ.) পৃথিবীতে এসে নিজের ভুলের জন্য খুব কেঁদেছেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর ভুলকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। ইতিপূর্বে হযরত হাওয়া (আ.) হযরত আদম (আ.) থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন। (এক জয়ীফ বর্ণনামতে জান্নাত থেকে হযরত আদম [আ.] কে হিন্দুস্তানে এবং হযরত হাওয়া [আ.] কে জেদ্দায় নামানো হয়েছিল।) আল্লাহ তাআলা উভয়কে একত্রিত করে দিয়েছেন। অতঃপর তাঁদের থেকে অসংখ্য সন্তান সন্ততি হয়েছে।

ফায়দা : লক্ষ করুন ! হযরত আদম (আ.)-এর ন্যায় হযরত হাওয়া (আ.)ও ভুল করেছেন, আবার তওবাও করেছেন। আমাদের অনেক মা-বোন আছেন যারা নিজেদের ভুল হয়ে গেলেও তা স্বীকার করতে চান না বরং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য নানা রকম কথা ও কারণ তৈরি করেন। কোনভাবেই যেন নিজেদের উপর দোষ না আসে তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। ফলে কখনও সেই পাপ থেকে তওবা করা হয়ে ওঠে না। কারণ পাপকে পাপ মনে করলেই তো তার জন্য তওবা আসবে। এমনও অনেক মহিলা আছেন, যারা জীবনভর পাপ করে যাচ্ছেন, অথচ তা বর্জনের নাম- গন্ধও নেই। বিশেষত গীবত করা ও রছম কুসংস্কার পালন করা মহিলাদের একটি দুরারোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। কোনভাবেই তারা রছম ও বেদআত-কুসংস্কার ছাড়তে চান না। এই অভ্যাস ছেড়ে দিতে হবে। পাপকে পাপ বলে স্বীকার করে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করে নিতে হবে।

হযরত আদম (আ.) ও হযরত হাওয়া (আ.) এর ঘটনা থেকে একথাও বোঝা যায় যে, আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে জান্নাতের জন্য তৈরি করেছেন। এজন্যই মানব জাতির আদি পিতা মাতাকে জান্নাতেই রাখা হয়েছিল। আমাদের আসল বাড়ি হল জান্নাত। আমাদের আসল ঠিকানা হল জান্নাত। দুনিয়া আমাদের আসল বাড়ি নয়, দুনিয়া আমাদের আসল ঠিকানা নয়। তাই আসল বাড়ির জন্য, আসল ঠিকানার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

হজরত হাজেরা (আ.)-এর নাম আমরা অনেকেই শুনেছি। তিনি ছিলেন হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর স্ত্রী এবং হযরত ইসমাঈল (আ.)-এর মাতা। হযরত ইসমাঈল যখন দুগ্ধপায়ী শিশু, তখন আল্লাহ তা’আলার মর্জি হল হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর সন্তানদের মাধ্যমে মক্কা আবাদ করবেন। অথচ তখন মক্কা নগরী ছিল এক জনশূন্য প্রান্তর। হযরত ইবরাহীম (আ.) তখন স্ত্রী হাজেরা ও পুত্র ইসমাঈল সহ বর্তমান ফিলিস্তিনের খলীল শহরে বাস করতেন। আল্লাহ তাআলা হযরত ইবরাহীম (আ.)কে আদেশ করলেন, হযরত হাজেরাকে তাঁর দুধের শিশুসহ মক্কায় রেখে এসো। আমিই তাঁদেরকে রক্ষা করব। আল্লাহর নির্দেশে হযরত ইবরাহীম (আ.) সন্তান ও স্ত্রীকে সেই জনশূন্য প্রান্তরে রেখে এলেন। সম্বল হিসেবে রেখে এলেন এক মশক পানি আর এক থলে খেজুর।

হযরত ইবরাহীম (আ.) যখন হযরত হাজেরা ও ইসমাঈলকে সেখানে রেখে শামদেশে চলে আসছিলেন, তখন হযরত হাজেরা (আ.) পিছে পিছে আসছিলেন আর বলছিলেন, আপনি এখানে আমাদেরকে একাকী রেখে যাচ্ছেন? হযরত ইবরাহীম (আ.) কোন জবাব দিচ্ছিলেন না। অবশেষে হযরত হাজেরা (আ.) জিজ্ঞেস করলেন : আপনি কি আপনার প্রভুর নির্দেশে আমাদেরকে রেখে যাচ্ছেন? তখন হযরত ইবরাহীম (আ.) বললেন : হ্যাঁ! তখন হযরত হাজেরা (আ.) বলে উঠলেন : তাহলে আমাদের আর কোন চিন্তা নেই। আল্লাহ নিজেই আমাদের অবস্থা দেখবেন।

তারপর হযরত হাজেরা (আ.) আল্লাহর উপর ভরসা করে সেখানেই বসবাস করতে লাগলেন। ক্ষুধা পেলে খেজুর খেয়ে পানি পান করে নিতেন আর হযরত ইসমাঈল (আ.)কে দুধ পান করাতেন। ধীরে ধীরে যখন মশকের পানি ফুরিয়ে গেল, তখন মা পুত্র উভয়ের পিপাসা বাড়তে লাগল। শিশু ইসমাঈল পিপাসায় ছটফট করতে লাগল। মা হাজেরা সন্তানের এই দশা বরদাশত করতে পারলেন না। কোন মা-ই সন্তানের এই করুণ দশা সহ্য করতে পারে না। সন্তানের এই করুণ দশা দেখে মা হাজেরা পানির সন্ধানে নেমে পড়লেন। দৌড়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী ‘সাফা’ পাহাড়ে আরোহণ করলেন। চারদিকে দৃষ্টি মেলে দেখলেন কোথাও পানির সন্ধান পাওয়া যায় কিনা। সেখানে পানির সন্ধান না পেয়ে পার্শ্ববর্তী ‘মারওয়া পাহাড়ে আরোহণ করলেন। দুই পাহাড়ের মাঝখানের সমতল ভূমির মাঝে কিছুটা স্থান নিচু আছে।

যতক্ষণ পর্যন্ত সমতল ভূমিতে চলছিলেন, ততক্ষণ বাচ্চাকে দেখতে পাচ্ছিলেন এবং তার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হেঁটে হেঁটে অগ্রসর হচ্ছিলেন! যখন ঐ নিচু স্থানে আসলেন, তখন আর বাচ্চাকে দেখা যাচ্ছিল না। তাই দৌড়ে ঐ নিচু স্থান পার হয়েছিলেন। মারওয়া পাহাড়ে গিয়ে আবার চারদিকে দৃষ্টি মেলে দেখলেন কোথাও পানির সন্ধান পাওয়া যায় কিনা। কিন্তু সেখানেও পানির কোন সন্ধান পেলেন না। আবার ছুটে গেলেন সাফা পাহাড়ে। এভাবে সাতবার পানির সন্ধানে উভয় পাহাড়ে চক্কর দিলেন এবং দুই পাহাড়ের মাঝখানের সেই নিচু স্থানটি প্রতিবারই দৌড়ে অতিক্রম করলেন। হযরত হাজেরা (আ.)-এর এই আমল আল্লাহ তাআলার কাছে খুব পছন্দ হল। সেমতে তিনি এই সাফা-মারওয়ার ছোটাছুটিকে হাজীদের নিয়মিত আমলের তালিকাভুক্ত করে দিলেন। এখনও সকল হাজীকে সাফা মারওয়ার মাঝে সায়ী করার সময় মাঝখানের সেই নিচু স্থানটুকু দৌড়ে অগ্রসর হতে হয়।

Rate the Post

Categories

Writers

Popular Books

Scroll to Top