বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; ইবনে কাসীর রহঃ রচিত সীরাত গ্রন্থ কাসাসুল আম্বিয়া এর pdf ফাইল ডাউনলোড করতে নিচে দেওয়া DOWNLOAD বাটনে ক্লিক করুন।
লেখক | ইবনে কাসীর রহঃ |
ধরন | নবীদের জীবনী |
ভাষা | বাংলা |
প্রকাশক | মুহাম্মদ এন্ড ব্রাদার্স |
প্রকাশকাল | ২০১৪ |
পৃষ্ঠা | ৮৮০ |
ফাইল সাইজ | ৩৮.১ MB |
ফাইল টাইপ |
কাসাসুল আম্বিয়া pdf. Qasas ul Anbiya Bangla pdf: বর্তমানকালের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে মানুষ সৃষ্টির ধারণা হলো, ‘ক্রমোন্নতি’ বা ধাপে ধাপে উন্নতি। বিজ্ঞানীদের মতে প্রাণীজগৎ প্রথমে ছিল নির্জীব পদার্থ। তারপর উদ্ভিদ। জাতীয় বিভিন্ন আকৃতি ধারণ করে লাখ লাখ বছর অতিক্রমের পর ধাপে ধাপে উন্নতি করে প্রথমে জোঁকের রূপ ধারণ করে। এরপর এরূপ বিভিন্ন প্রাণীর ছোট বড় রূপ ধারণ করতে করতে অবশেষে মানব আকৃতিতে স্থিতি লাভ করেছে।
কাসাসুল আম্বিয়া pdf
কিন্তু ধর্মীয় মত হলো, মহাবিশ্বের স্রষ্টা মহান আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের প্রথম মানব হযরত আদম আ.-কে মানব আকৃতিতেই সৃষ্টি করেছেন। তারপর আদম আ.- থেকে হযরত হাওয়া আ.-কে অস্তিত্বে এনে ধারাবাহিকভাবে মানব জাতির বংশ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেছেন। আর আদম আ. হলেন সেই মানুষ, বিশ্ব প্রতিপালক যাকে সকল সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। আল্লাহ পাক শরিয়তের গুরুদায়িত্ব তাঁর ওপর অর্পণ করেছেন। এবং সমস্ত সৃষ্টিকে তাঁর বাধ্যগত করে আল্লাহ পাক পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধিত্বের মহান দায়িত্ব দান করেছেন।
আল্লাহ পাক এ সম্পর্কে বলেন : “আমি আদমকে পৃথিবীতে আমার প্রতিনিধি নিযুক্ত করব।” (সূরা বাকারা : ৩০) আল্লাহ পাক হযরত আদম আ.কে সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে যেমনি শ্রেষ্ঠত্ব ও সম্মান দান করেছেন, তেমনি তাকে সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির সুন্দরতম অবয়বে। আল্লাহ পাক বলেন : “আর নিঃসন্দেহে আমি আদম সন্তানদেরকে সকল সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব ও সম্মান দান করেছি।” (সূরা বনি ইসরাইল : ৭০)
“নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে অতি উত্তম গঠনে সৃষ্টি করেছি।” (সূরা তীন : ৪) আদি মানব হযরত আদম আ. ক্রমোন্নতি মতবাদ অনুযায়ী ধাপে ধাপে উন্নীত হয়ে মানবাকৃতি ধারণ করেছেন, না কি সৃষ্টির শুরু থেকেই মানবরূপে অস্তিত্ব লাভ করেছেন এ ব্যাপারে মতভেদ যা-ই থাকুক, বিবেক ও ধর্ম এ কথায় অবশ্যই একমত, বর্তমানে এ মানবজাতি সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠসৃষ্টি এবং জ্ঞান বুদ্ধি-বিবেকসম্পন্ন। এ গঠনাকৃতিকেই তার ভালো-মন্দ কাজের জন্য আল্লাহ পাকের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এটাই আল্লাহর নির্ধারিত বিধান।
কাসাসুল আম্বিয়া বাংলা pdf
বলা যায়, মানুষের কার্যকলাপ, ইলম-আমল, চরিত্র ইত্যাদির প্রেক্ষিতে তার অস্তিত্ব লাভের বিশদ বিবরণ কী, এর তেমন গুরুত্ব নেই। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সৃষ্টিজগতে তার অস্তিত্ব কি নিরর্থক ও উদ্দেশ্যহীনভাবেই এসেছে, না কি কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে? তার কার্যাবলী ও উক্তিসমূহের ফলাফল কি একেবারেই উদ্দেশ্যহীন? তার জড় দেহ ও আধ্যাত্মিক মর্যাদা সবই কি অর্থহীন নিষ্ফল, না কি মূল্যবান প্রতিফলের অধিকারী ও তাৎপর্যপূর্ণ?
এ সকল প্রশ্নের উত্তর যদি নেতিবাচক না হয়ে ইতিবাচক হয়, তবে স্বতঃসিদ্ধভাবে মেনে নিতে হবে, মানব সৃষ্টির অবস্থা সম্বন্ধে আলোচনার পরিবর্তে পৃথিবীতে তার অস্তি ত্ব লাভের উদ্দেশ্যের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল করা উচিত। মনে রাখতে হবে, সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টির অস্তিত্বের পেছনে এক মহান উদ্দেশ্য রয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন-
মানুষ কি এরূপ ধারণা করে নিয়েছে, তাদেরকে উদ্দেশ্যহীনভাবে পরিহার করা হবে। বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন এ আকৃতিকে সমগ্র সৃষ্টিজগতের সেরা বানিয়ে তাকে প্রদান করা হয়েছে ভালো-মন্দ পার্থক্যকরণের শক্তি। মন্দ হতে দূরে থাকার এবং ভালোকে গ্রহণ করার জন্য দেওয়া হয়েছে পথ-নির্দেশনা। আল্লাহ তাআলা বলেন : আল্লাহ পাক মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তাকে ভালো-মন্দের পথ দেখিয়েছেন।
Qasasul Ambiya Bangla pdf
অনন্তর আমি মানুষকে ভালো ও মন্দ উভয় পথ প্রদর্শন করেছি।” কোরআন মাজিদের উপদেশ ও দাওয়াত, সকল আদেশ-নিষেধ, হেদায়াত ও পথ প্রদর্শনের লক্ষ্যস্থল এবং দুনিয়া ও আখেরাতের কেন্দ্রস্থল এ জীব অস্তিত্বই; যাকে মানুষ নামে আখ্যায়িত করা হয়। এ কারণেই কোরআন মাজিদে আদি মানবের সৃষ্টির অবস্থা ও বিস্তারিত বিবরণ প্রদান না করে তার জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের বিধানাবলীর প্রতি গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে ।
পবিত্র কোরআনুল কারিমে হযরত আদম আ.-এর নাম ২৫ বার এসেছে। কোরআন মাজিদে পয়গম্বরগণের আলোচনায় সর্বপ্রথম হযরত আদম আ.-এর আলোচনা এসেছে। সূরা বাকারা, আরাফ, ইসরা, কাহাফ এবং ত্বহায় তাঁর নাম, গুণাবলী ও কার্যাবলীর আলোচনা হয়েছে। সূরা হিজর ও ছোয়াদে শুধু গুণাবলী এবং সূরা আল- ইমরান, মায়েদা, মারইয়াম এবং ইয়াসিনে আনুসাঙ্গিকরূপে শুধু নামের উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
স্মরণ করো, যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদের বললেন, আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করছি। তারা বলল : আপনি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে অশান্তি ঘটাবে ও রক্তপাত করবে? আমরাই তো আপনার সপ্রশংস স্তুতি ও পবিত্রতা ঘোষণা করি। তিনি বললেন, আমি যা জানি তোমরা জান না।” এবং তিনি আদমকে যাবতীয় নাম শিক্ষা দিলেন, তারপর তিনি সমুদয় ফেরেশতার সম্মুখে তা প্রকাশ করলেন এবং বললেন, তোমরা আমাকে এ সবের নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও! তারা বলল, আপনি মহান, পবিত্র! আপনি আমাদের যা শিক্ষা দিয়েছেন, তা ছাড়া আমাদের তো কোনো জ্ঞানই নেই। বস্তুত আপনি মহাজ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়।
Qasas ul Anbiya Bangla pdf
তিনি বললেন, হে আদম! তাদেরকে এ সবের নাম বলে দাও। যখন সে তাদেরকে এ সবের নাম বলে দিল- তিনি বললেন : আমি কি তোমাদের বলি নি, আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর অদৃশ্য বস্তু সম্বন্ধে আমি নিশ্চিতভাবে অবহিত এবং তোমরা যা প্রকাশ কর আর যা গোপন কর, আমি তা-ও জানি? আর যখন ফেরেশতাদের বললাম, তোমরা আদমকে সিজদা করো। তখন ইবলীস ছাড়া সকলেই সিজদা করল। সে অমান্য করল ও অহংকার করল।
সুতরাং সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। এবং আমি বললাম, হে আদম! তুমি ও তোমার সঙ্গিনী জান্নাতে বসবাস কর এবং যেথায় ইচ্ছে আহার করো; কিন্তু এ বৃক্ষের নিকটবর্তী হয়ো না। তা হলে তোমরা অন্যায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। কিন্তু শয়তান সেখান থেকে তাদের পদস্খলন ঘটাল এবং তারা যেখানে ছিল সেখান থেকে তাদের বিতাড়িত করল। আমি বললাম : তোমরা একে অন্যের শত্রুরূপে নেমে যাও আর পৃথিবীতে কিছুকালের জন্য তোমাদের রইল বসবাস ও জীবিকা।