Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

তিব্বে নববী pdf

তিব্বে নববী pdf Description

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; হাফিয আকরমুদ্দিন লিখিত বই তিব্বে নববী এর pdf ফাইল ডাউনলোড করতে নিচে দেওয়া DOWNLOAD বাটনে ক্লিক করুন।

যাবতীয় প্রশংসা প্রতিপালক আল্লাহর যিনি আমাকে খাওয়ান ও পান করান, আমি যখন অসুস্থ হই তিনি রোগ মুক্ত করেন এবং যিনি আমার মৃত্যু দিবেন অতঃপর জীবিত করবেন। দরূদ ও সালাম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণের উপর।

অতপর প্রত্যেক মানুষের জানা দরকার যে, আল্লাহ তাআলা তাকে শুধু তাঁর ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু আল্লাহ তাআলার ইবাদাত ততক্ষণ পর্যন্ত সঠিকভাবে সম্ভব নয় যতক্ষণ পর্যন্ত সুস্থতা অর্জন না হবে । সুস্থতা অর্জন এ অবস্থার উপর নির্ভরশীল যে, মানুষ স্বীয় শারীরিক সুস্থতার প্রতি খেয়াল রাখে। সাধারণভাবে এজন্য চারটি পদ্ধতি প্রচলিত আছেঃ ১. দোয়া ২. দাওয়া ৩. কর্ম ৪. বর্জন।

কিন্তু শারীরিক রোগে কিছু চিকিৎসা যেমন জালিনুস ও অন্যান্যরা, যারা শুধু গবেষণার উপরই জোর দেয় এবং রোগ নিরাময়ের জন্য দোয়াকে যথেষ্ট মনে করে না। বরং মুসলমানদের সম্পর্কে বলে যে, এসব মানুষ যারা রোগ মুক্তির জন্য দোয়াকে কার্যকর বলে তাদের এটা একটা ধারণা। কারণ দোয়ার সম্পর্ক শুধু জবানের সাথে, শারীরিক অসুস্থতার উপর তা কার্যকর হয় না। কিন্তু এ ধারণা ত্রুটিযুক্ত। এটা এজন্য যে, কথার প্রতিক্রিয়া সবাই জানে। যেমন প্রবাদ আছে-তরবারীর আঘাত শুকিয়ে যায় কিন্তু জিহ্বার আঘাত শুকায় না।

অনুরূপ কোনো ব্যক্তি যদি কাউকেও মন্দ বলে তবে সম্বোধিত ব্যক্তি আহত হয়ে যায় এবং ঐ ব্যক্তির অন্তরে প্রতিশোধ স্পৃহা সৃষ্টি হয়। এরূপে ভালোকথার প্রভাব মানুষের অন্তর পর্যন্ত পৌঁছায়। একজন সাধারণ মানুষের কথা যখন এ পরিমাণ প্রভাবশীল তখন আল্লাহ তাআলার কথায় প্রভাব কেনো হবে না। কিন্তু এটা ছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি দোয়ার প্রভাব স্বীকারকারী না হয় তবে এটা তার অজ্ঞতা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ সে কুকথা ও সুকথার প্রভাব স্বীকারকারী কিন্তু আল্লাহর নাম ও কালামুল্লাহর স্বীকারকারী নয়।

সারকথা এই যে, আল্লাহ মানুষকে শরীর ও আত্মা দুটো জিনিস দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু রাহমাতুল্লিল আলামীন সেহেতু তাঁকে আত্মার ব্যাধির চিকিৎসার সঙ্গে শারীরিক ব্যাধির চিকিৎসার কথাও বলে দেয়া হয়েছে। কারণ তাঁকে যদি শারীরিক ব্যাধির চিকিৎসা শেখান না হতো তবে ইসলামের শত্রুরা তাঁর জীবদ্দশায় ও তিরোধানের পরে ওলামায়ে উম্মতের সামনে বিরুদ্ধ প্রশ্ন উত্থাপন করতো যে, তাঁকে আল্লাহ তাআলা কিরূপে রাহমাতাল্লিল আলামীন বানিয়েছেন ? কেননা মানুষের শরীরও দুনিয়ার অধীন।

বস্তুত তাঁর মানুষের শরীর সংশোধনের কোনো জ্ঞানই নেই। তাহলে তিনি শরীরের জন্য কোনো প্রকার রহমত হতে পারে না । এই কূট প্রশ্নের উত্তর দেয়া প্রত্যেকের জন্য দুসাধ্য হতো। এ কারণে আল্লাহ তাআলা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শরীর ও আত্মা উভয়ের চিকিৎসা শিখিয়েছিলেন। কিন্তু অবশ্যই বুঝা দরকার যে, হাকিমগণ শুধু ঔষধ দ্বারা শারীরিক চিকিৎসা করেন এবং হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঔষধ ও দোয়া উভয় দ্বারা নিজের উম্মতকে চিকিৎসা করেন। এ ক্ষেত্রে প্রমাণ করে যে, বহু ব্যাধি এমন আছে যা ঔষধে সারে না। যেমন যাদুর আছর, নজর লাগা।

এ ব্যাধিগুলো আল্লাহ পাকের নাম এবং দোয়াসমূহের দ্বারাই আরোগ্য হয়। বরং বহু চিকিৎসাকর্ম মানুষকে সতর্কতা স্বরূপ শিখান হয়েছে যাতে ঐগুলো ব্যবহার করলে তার বরকতে কোনো বালা না আসে। তার বিস্তারিত বর্ণনা এ পুস্তকে ইনশাআল্লাহ করা হবে। ব্যাধি প্রকাশ পাবার পূর্বে তার চিকিৎসা জ্ঞান শুধু আম্বিয়া কেরামগণকেই দেয়া হয়েছে। এটাই রাহমাতাল্লিল আলামীনের অর্থ। কিন্তু একথা স্মরণযোগ্য যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লামের চিকিৎসা জ্ঞান ওহির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং দুনিয়ার সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি শুধুমাত্র গবেষণালব্ধ। কেউ কেউ গবেষণালব্ধ জ্ঞানকে নির্ভুলের কাছাকাছি বলে মত ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু গবেষণা কখনো ওহীর মর্যাদায় পৌঁছতে পারে না।

এজন্য যে তিব্বে নববী দ্বারা নিজের শরীরের চিকিৎসা করতে চায় তাকে প্রথমে নিজের অন্তরে তিব্বে নববী সম্পর্কে বিশ্বাসকে দৃঢ় করতে হবে। কারণ তা ছাড়া তিব্বে নববী দ্বারা উপকার হবে না। বিশ্বাস যে পরিমাণ শক্ত ও দৃঢ় হবে, সে পরিমাণই উপকার হবে । যদি কেউ তাতে জ্ঞানের দখল দেয় তবে সে উপকার হতে বঞ্চিত থাকবে। কারণ আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম রূহানী চিকিৎসক। তাঁদের রূহানী চিকিৎসায় যেমন জ্ঞান প্রবেশ করতে পারে না।

ঐরূপ শারীরিক চিকিৎসাও জ্ঞানের সামঞ্জস্বী হতে পারে না। এ কারণে মুসলমানদের উচিত এই যে, রোগ ব্যাধির চিকিৎসা ঔষধ দ্বারা ও দোয়ার দ্বারা করা, যাতে মানুষ শুধু ঔষধের উপর নির্ভরশীল না হয়ে পড়ে। ঔষধ ও চিকিৎসা প্রচেষ্টার প্রয়োজন। কিন্তু নিরাময় আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মনে করতে হবে। ঔষধকে মাধ্যম ও চেষ্টা ছাড়া স্বয়ম্ভর মনে না করা প্রয়োজন। যে ব্যক্তি শুধু ঔষধকে নিরাময় সর্বস্ব মনে করবে সে মুশরিক, এ সন্দেহের কারণে কোনো কোনো ওলামায়ে কেরাম ঔষধ ব্যবহারকে মাকরূহ বলেছেন।

যাতে ঔষধ সেবন করতে করতে তার উপর নির্ভরশীল না হয়ে যায় এবং মৃত্যুর সময় ফেরেশতা বলে যে ঞ; এটা সেই মৃত্যু যা হতে তুমি পালাতে। অর্থাৎ অসুখ হলেই ঔষধের দিকে দৌড়াতে, এর মালিক আল্লাহ তাআলার উপর নির্ভর করতে না। কিন্তু সঠিক কথা এই যে, ঔষধ সেবন করাও সুন্নাত ও প্রয়োজন। কারণ উসামা বিন শারীফ (রা) বলেন, “একদা আমি হুযুর আকরাম (স)-এর পবিত্র দরবারে উপস্থিত হয়ে জানতে চাইলাম যে, ইয়া রসূলুল্লাহ (স) রোগের কারণে ঔষধ ব্যবহার করলে গুনাহ হবে কি না, হুযুর (স) বললেন, ঔষধ সেবন কর।

হে আল্লাহর বান্দাহগণ ! ঔষধ সেবন কর এজন্য যে, আল্লাহ তাআলা যত ব্যাধি সৃষ্টি করেছেন তার সাথে এর ঔষধও সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু মৃত্যুর অসুখ এর ব্যতিক্রম।” এ হাদীস হতে জানা গেলো যে, ঔষধ সেবন করাও সুন্নাত। এ সমস্ত বর্ণনা দ্বারা একথা পরিস্ফুট হয় যে, শারীরিক চিকিৎসা চার পদ্ধতিতে করা হয়- (১) ঔষধ দ্বারা (২) দোয়া দ্বারা (৩) কোনো নির্দিষ্ট কর্ম দ্বারা (8) কোনো নির্দিষ্ট কর্ম বর্জন দ্বারা।

দোয়ার দ্বারা চিকিৎসা করা আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামগণের জন্য নির্দিষ্ট, যাতে অন্য কেউ শরীক নেই। এজন্য এ কিতাবে চারটি চিকিৎসা পদ্ধতিকে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হবে এবং প্রত্যেক চিকিৎসার জন্য হাদীসে রসূল (স) এবং সেই সাথে প্রামাণ্য কিতাবের বর্ণনাও করা হবে । সাথে সাথে ওলামায়ে কেরামগণের বক্তব্য উদ্ধৃত করা হবে। কারণ ওলামাগণ হুযুর (স)-এর প্রতিনিধি এবং হাদীসে রাসূলের ব্যাখ্যাতা।

যে হাদীস ও মতামতকে বর্ণনা করা হবে তার প্রথমে (এলাজ) শব্দটি লেখা হবে এজন্য যে, তিব্বে নববীর জন্যও এ শব্দই অধিক সামঞ্জস্যশীল। এ সংক্ষিপ্ত পুস্তকে অধ্যায় ও পরিচ্ছদ নির্ধারণ করা হয়নি। কারণ, তা বড় পুস্তকের জন্য প্রয়োজন হয়। শরীরের সুস্থতার জন্য প্রথম প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হলো বিবাহ করা। এজন্য ঐ চিকিৎসা দ্বারা লেখা আরম্ভ করা হয়েছে।

“কিয়ামতের দিন মু’মিনের ওজনের দাঁড়িপাল্লায় সবচেয়ে অধিক ভারী জিনিস সচ্চরিত্র। তার চেয়ে বেশী ভারি আমল আর কিছু হবে না।”- আবু দাউদ, তিরমিযী।

Rate the Post

Categories

Writers

Popular Books

Scroll to Top