বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; কামাল উদ্দিন দামেরী লিখিত বই হায়াতুল হায়াওয়ান এর pdf ফাইল ডাউনলোড করতে নিচে দেওয়া DOWNLOAD বাটনে ক্লিক করুন।
জীব-জন্তু-প্রাণী মানব জাতির জন্য একটি নিত্যনৈমিত্তিক-জরুরী বস্তু। খাওয়াতে, চড়াতে, পালাতে, কৃষিতে, ঔষধীতে, সৌন্দর্য দর্শনে ইত্যাদি ইত্যাদি কাজে জীব-জন্তু মানুষের অত্যাবশ্যক। আবার কিছু প্রাণী তো এমনও আছে যাদের বসবাস সার্বক্ষণিক মানুষকে ঘিরেই । অনেক সময় মানুষ অতিষ্ঠ হয় বটে কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে এসব প্রাণীর উপস্থিতি এক প্রকার রহমত স্বরূপই হয়ে থাকে। এক কথায় বলতে গেলে প্রাণী জগতের অস্তিত্ব ছাড়া মানুষের জীবন যাপন দুস্কর-অসম্ভব। বর্তমান বৈজ্ঞানিক যুগে প্রাণী নির্ভর অনেক কাজ-এর বিকল্প বাস্তবে রূপ পাচ্ছে। কিন্তু এমন বহু আবশ্যিক দিক আছে যে গুলো প্রাণী ছাড়া আদৌ সম্ভব নয় এবং আগামীতেও হবে না।
হায়াতুল হায়াওয়ান pdf
যুগ যুগ ধরে মুসলিম-অমুসলিম বড় বড় মনীষীগণ প্রাণী জগত নিয়ে বহুবিধ গবেষণা চালিয়েছেন। তাদের গবেষণার ফলশ্রুতিতে এ পর্যন্ত প্রাণী জগত থেকে মানুষের উপকৃত হওয়া। আল্লামা কামাল উদ্দীন মুহাম্মদ দামিরী (রঃ) প্রাণী জগত সম্পর্কে ভিন্ন ধারার একটি গবেষণা মুসলিম উম্মাহকে উপহার দিয়েছেন। যে গবেষণা ছিল আপন সময়ের জন্য অনন্য। বর্তমান বিজ্ঞানের যুগে প্রাণী জগৎ সম্পর্কে আরও বহুবিধ গবেষণা চলছে এবং চলবে। কিন্তু বেশ কিছু কারণে আল্লামা দামেরীর প্রাণী জগত সম্পর্কে গবেষণাটা বর্তমানেও অনন্য হয়ে রয়েছে। ইসলামী শরীয়তে কোন কোন প্রাণীর কি হুকুম, কোন প্রাণীকে কিভাবে কে স্বপ্নে দেখলে তার ব্যাখ্যা কি হতে পারে এ ধরনের গবেষণা লগ্ন আরেকটি গ্রন্থ এখনো বের হয়নি। সে হিসেবে আল্লামা দামেরী হায়াতুল হাওয়ান নামক কিতাবটি এখনও সেরা গ্রন্থ-তাতে কোন সন্দেহ নেই।
আমি কামিল পরীক্ষার্থী থাকাকালীন কোন বিশেষ প্রয়োজনে কিতাবটি আমার ক্রয় করতে হয়েছে। কিতাবটির ভাষা ছিল উর্দু। উর্দুভাষায় আমি খুব একটা পাকা ছিলাম না। সে জন্য একিতাব থেকে উপকৃত হতে আমাকে বহু অভিধানের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। অভিধান থেকে কোন শব্দ আমি বের করার পর সেগুলোকে পত্রন্ত করারও একটা ধারা আমার মধ্যে ছিল। এক সময় চিন্তা হল কিতাবটির এত শব্দ আমি পত্রস্ত করলাম যদি আল্লাহ করে কিতাবটির একটি বাংলা অনুবাদ আমার দ্বারা হয়ে যায় তবে আমার দেশবাসী তা থেকে ভালই উপকৃত হতে পারতো। অনেকটাই দূরাশা বললেই চলে। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি যখন ইসলামীক ষ্টাডিজে মাষ্টার্স করতে ছিলাম তখন আমাকে আমার এক বন্ধু কিতাবটির অনুবাদের ব্যাপারে পরামর্শ দেন। তাকে বললাম আমি দূর্বল! এ কথা শুনে সে আমাকে বলল সাধনাই তো সব কিছু দূর্বলতা কাটে।
হায়াতুল হায়াওয়ান pdf free download
তার উৎসাহপূর্ণ কথা শুনে আমি কিতাবটির অনুবাদের ব্যাপারে আরো অনুরাগী হই। দৈনিক কিছু কিছু কাজ করার দৃঢ় ইচ্ছা নিয়ে কাজ এগুতে থাকি। এর ভিতর এক দিন কোন একটি বই মেলায় কিতাবটির একটি বাংলা অনুবাদ আমার হাতে পড়ে। তা দেখে আমার মনে হতাশার জন্ম হয়। আমার বন্ধুদের বললাম জীবনে একটা কাজে হাত দিলাম কিন্তু এতে সফল হলাম না। কেন? কারণ………। তারা বলল এটাকি কথা হলো? এ অনুবাদ গ্রন্থতো তোমার জন্য আরো সহায়ক হবে। এতে হতাশ হওয়ার কি আছে। একটি কিতাবের কত অনুবাদ হতে পারে। হতাশা কাটল। উৎসাহ দ্বিগুণ হলো। কিন্তু সময়ের স্বল্পতার কারণে কাজ খুব ধির গতিতেই এগুচ্ছিল।
ইতিমধ্যে আমার কুয়েতের ভিসা হয়ে যায়। অবশ্য অনুবাদক হিসেবেই ভিসাটি এলো। পার্থিব তাড়নায় কুয়েতে এসে প্রবাসীদের সঙ্গি হয়ে গেলাম। প্রবাসের গ্লাণী কাটতে অনেক দিন সময় লেগেছে। আমার কর্মস্থলের পাশে একজন মাওলানাকে সবসময় হটা চলা করতে দেখতেছিলাম। এক দিন তাঁর সাথে পরিচয় হয়। হতে হতে কথা প্রসঙ্গে একদা হায়াতুল হায়ওয়ানের অনুবাদের বিস্তারিত ঘটনা তাকে বলা হয়ে গেল। তিনি আমাকে এহেন মহৎ কাজে উৎসাহ প্রদান করেন এবং নিজেও সম্পাদনাগত কাজ কর্মে সময় দিবেন বলে। প্রতিশ্রুতি দেন। তাতে আমার উৎসাহের ধারা গতি পেল। আমার অনুবাদের কপিসহ কিতাবটি কুয়েতে নিয়ে আসি। কিন্তু কাজ চলে না।
Hayatul Haiwan Bangla pdf
বিভিন্ন ব্যস্ততার ফাঁকে কাজ কতইবা চলবে। তারপরেও ধীরে ধীরে অনুবাদকাজ সমাপ্তির দিকে যাচ্ছিল। একদিন আমার সে বন্ধু মাওলানা রিজওয়ান জমীরাবাদীকে বললাম ভাই আমার কাজ তো এক প্রকার সমাপ্তির দিকে এখন আপনার কাজ। তিনি বললেন আমিতো আপনার সাথে ওয়াদা করে আটকে গেলাম। আচ্ছা দেখি চেষ্টা করব। তিনি আসলেই চেষ্টা করেছেন। হাজার কর্মব্যস্ততার মাঝেও কিতাবটির বেশিরভাগ অংশ দেখে দিয়েছেন। অনুবাদগত অনেক ভুল ভ্রান্তিও তাঁর চোখে ধরা পেড়েছে এবং তা তিনি শুদ্ধ করে দিয়েছেন। সে জন্য আমি তার শুকরিয়া আদায় করি।
বছর দুয়েক পার হওয়ার পর দেশে আসার ব্যবস্থা হল। আগে থেকেই ভাবতে ছিলাম, ভাল হোক বা খারাপ হোক কাজ তো করছি, কিন্তু এটি প্রকাশ করার ক্ষেত্রে কি করতে পারি জানি না। দেশে ফেরার পর বন্ধুগণের সাথে পরামর্শ করলাম। বিভিন্নজন বিভিন্ন পরামর্শ নিয়েছেন। কিন্তু আমার অন্তরে আসল বইটি আপাতত কাউকে ছাপার জন্য দেব না। বরং আমি নিজেই ছাপব। এর ভিতর গাউসিয়া পাবলিকেশন্সের ম্যানেজার মাওলানা আবু তাহেরের কাছে দেখা হল। তাঁর কাছেও বেশ পরামর্শ পেলাম। তাঁর সহযোগিতায়ও ধন্য হয়েছি।
পরিশেষে আমি আল্লাহ পাকের শূকর আদায় করি। আমাকে যারা সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদেরও শুকরিয়া আদায় করি। বিশেষ করে মওলানা জমীরাবাদীর ইহসানের উপর আমি খুব বেশী শুকরগুজার। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন কিতাবের উসীলায় আখেরাতে মুক্তির পথ খুলে দেন। আমীন।