বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; প্রিন্সিপাল হাফেজ নযর আহমদ লিখিত বই তিব্বে নববী- বিশ্বনবীর চিকিৎসা বিধান এর pdf ফাইল ডাউনলোড করতে নিচে দেওয়া DOWNLOAD বাটনে ক্লিক করুন।
লেখক | প্রিন্সিপাল হাফেজ নযর আহমদ |
ধরন | ইসলামী চিকিৎসা |
ভাষা | বাংলা |
প্রকাশক | হক লাইব্রেরী |
প্রকাশকাল | জুন ১৯৯৭ |
পৃষ্ঠা | ২৩৭ |
ফাইল সাইজ | ১০.২ MB |
ফাইল টাইপ |
হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের প্রতিটি বাণীই ছিল অসাধারণ প্রজ্ঞায় পূর্ণ। প্রথমতঃ তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরণাপ্রাপ্ত না হয়ে কথা বলতেন না; দ্বিতীয়তঃ মানব সৃষ্টির প্রথম থেকে শুরু করে একেবারে শেষ পর্যন্ত বিস্তৃত সকল জ্ঞানই তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। এ কারণে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের স্বাস্থ্যবিধান সম্পর্কিত বাক্য এবং পরামর্শগুলিও স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের একটা অতুলনীয় রত্নভান্ডার রূপে পরিগণিত হয়ে থাকে।
তিব্ব বা চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কিত হাদীসগুলি সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকেই সংগৃহীত ও বিশ্লেষিত হয়েছে। হিজরীর দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতকে মুসলিম জ্ঞান- তাপসগণ পদার্থ বিদ্যা ও চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা ও গ্রীক বিজ্ঞানের অনুবাদ করার কালেও তিব্ব সম্পর্কিত হাদীসগুলি তুলানামূলকভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। স্পেনে মুসলিম বিজ্ঞানচর্চার চরম উন্নতির যুগেও অন্যান্য বিষয়াদির পাশাপাশি তিব্বুন নববী বা চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কিত হাদীসগুলি ব্যাপকভাবে বিশ্লেষিত হয়েছে।
অতি আধুনিক কালেও মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা অনুষদের পক্ষ থেকে তিব্ব সম্পর্কিত হাদীসগুলি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাথে তুলনামূলকভাবে বিশ্লেষিত হয়েছে। সেই মূল্যবান অভিসন্ধর্ভটি আরবী ভাষায় দু’খন্ডে প্রকাশিত হয়ে ইদানিং কালে সারা বিশ্বে বিশেষতঃ চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ব্যাপক আলোড়না সৃষ্টি করেছে। আমার জানা মতে এদেশের একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক মরহুম ডাক্তার এস, জি, এম চৌধুরী উক্ত আরবী বইটির বাংলা অনুবাদ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
তিব্বে নববী সম্পর্কে প্রাচীন কাল থেকেই আরবী ফাসী উর্দূ ভাষায় অসংখ্য বই- পুস্তক সংকলিত হয়েছে। এসব প্রামাণ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে প্রখ্যাত হাদীস তত্ত্ববিদ ইবনে কাইয়োমের তিব্বুন ‘নববী পৃথিবীর বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে। সে গ্রন্থ অবলম্বন করেই করাচীস্থ মদীনাতু-তিব্ব-এ একটি উচ্চতর গবেষণা কর্ম পরিচালিত হচ্ছে।
বর্তমান গ্রন্থটি লাহোরস্থ শিবলী কলেজের প্রিন্সিপ্যাল জনাব হাফেজ নযর আহমদ কর্তৃক সংকলিত। এ গ্রন্থের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তিব্ব বা স্বাস্থ্য বিধি সম্পর্কিত প্রতিটি বর্ণনার মূল উদ্ধৃতি, অনুবাদ, ব্যাখ্যা এবং আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে তুলনামূলক আলে- চিনা। এর ফলে বর্ণনাগুলি সাধারণ পাঠকের পক্ষে সহজবোধ্য হয়েছে। তিব্বে নববী সম্পর্কিত বর্ণনাগুলিও পবিত্র হাদীস ও সীরাতের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বাংলা ভাষায় সীরাত ও সুন্নাহ চর্চার দৈন্য সর্বজনবিদিত। আমার দৃষ্টিতে ইতিপূর্বে তিব্বে নববী সম্পর্কিত কোন পুস্তক পুস্তিকা সংকলন বা তরজমার উদ্যোগ ধরা পড়েনি। বর্তমান বইটি এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমি প্রয়াস। দোয়া করি আল্লাহ পাক বিজ্ঞ অনুবাদক এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের শ্রম কবুল করুন।
আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আরাইহি ওয়া সাল্লাম বিশ্ব মানবতার সার্বিক উৎকর্ষ সাধনের জন্য প্রেরিত হয়েছেন। রূহানী চিকিৎসার পাশাপাশি রাহমাতুল্লিল আলামীন হিসাবে তিনি উম্মতের দৈহিক চিকিৎসার ক্ষেত্রেও যেসব তথ্য দিয়ে গেছেন, আজ জ্ঞান-বিজ্ঞানের চরম উন্নতির অধুনা এ যুগেও তাঁর পরিবেশিত অন্যান্য সকল তথ্যের ন্যায় চিকিৎসা- বিজ্ঞান সম্পর্কিত তথ্যাবলীও এমন এক চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত যে, সংশ্লিষ্ট গবেষকগণ আজও তা থেকে কেবল উপকৃতই হচ্ছেন না; বরং এসব তথ্যাবলীকে তারা চিকিৎসা বিজ্ঞানের মাপকাঠি রূপে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। সময় যতই অতিবা- হিত হচ্ছে, এর বাস্তবতা ততই দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
প্রিন্সিপ্যাল জনাব হাফেজ নযর আহমদ কর্তৃক উর্দূ ভাষায় সংকলিত তিব্বে নববী (সঃ) গ্রন্থটিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কিছুটা সুন্দরভাবে বিন্যস্ত হয়েছে। বাংলা অনুবাদক মূলানুগ অনুবাদের জন্য চেষ্টার কোন ত্রুটি করেন নাই। এ জন্য তিব্ব শাস্ত্রে বিশেষজ্ঞগণের সাথে যোগাযোগ করে তাদের নির্দেশনাও গ্রহণ করা হয়েছে।
তারপরও বাংলা ভাষায় যেহেতু এটি প্রথম প্রয়াস, তাই অনিচ্ছাকৃত ভুল-ত্রুটি থাকা স্বাভাবিক। বিজ্ঞ পাঠকের খেদমতে এ সম্পর্কিত সুপরামর্শ প্রদানের আশা রইল। যাতে সামনে বইটি সর্বাঙ্গ সুন্দর করা যায়। আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে তাঁর মর্জি মোতাবেক চলার এবং তাঁর হাবীবের (সঃ) আদর্শ অনুসরণ করার তাওফীক দান করুন। আমীন!!
হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা’আলার রাসূল ও নবী ছিলেন। তিনি আল্লাহর বান্দাগণকে আল্লাহর আখেরী পয়গাম পৌঁছিয়েছেন। যা কিয়ামত পর্যন্ত সময়ের জন্যেই মানুষের হেদায়াত, কল্যাণ ও সফলতার একমাত্র মাধ্যম। আল্লাহ তা’আলার এই পয়গাম ও কালাম দুনিয়াবাসীর নিকট ‘কুরআন মজীদ’ ও ‘ফুরকানে হামীদ’ নামে পরিচিত।
হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা ও কাজ সমগ্ৰ মানবজাতির জন্য একমাত্র অনুসরণীয় জীবনাদর্শ। আল্লাহর কিতাবের পরই আল্লাহর রাসূলের সুন্নাতের, মর্যাদা। হাদীস গ্রন্থ সমূহে হযরত রাসূলে মকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা, কাজ, পছন্দ-অপছন্দ সব কিছুর বর্ণনা সংরক্ষিত রয়েছে। ইসলামী তালীম ও শিক্ষার এই দ্বিতীয় উৎসধারাই তিব্বে নববী’র মূলভিত্তি।
আখেরী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ‘মানসাব’ তথা তাঁর প্রতি অর্পিত আসল দায়িত্ব ছিল নবুওয়াত ও রেসালাত। তিনি সমগ্র বিশ্বমানবতার হিদায়াত ও পথ প্রদর্শনের জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন। তিনি পথহারা মানুষের মনে, চোখে আলো দিতে, তাদের চারিত্রিক ও আত্মিক উন্নতি বিধানে, তাদের ব্যক্তি ও পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক, ইহলোকিক ও পারলৌকিক মোটকথা সামগ্রিক জীবনের সর্বক্ষেত্রে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আবির্ভূত হয়েছিলেন।